দেশের মানুষ জেগে উঠেছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি আবারও আহ্বান করে বলছি এদেশকে রক্ষা করার জন্য বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর কথা বলছি না।

ক্ষমতায় বসানোর কথা বলছি বাংলাদেশের মানুষকে, কারণ ক্ষমতার মালিক হচ্ছে জনগণ। তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চাই। মানুষের জীবনের অধিকার চাই, নিরাপত্তা চাই। কথায় কথায় গুলি করবেন? কথায় কথায় ফেলে দিবেন, কথায় কথায় আগুন জ্বালিয়ে দিবেন এদেশের মানুষ আর সহ্য করবে না।

আজ শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। মুন্সীগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত যুবদল নেতা শাওন হত্যার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী যুবদল এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দুর্বার আন্দোলন করে তুলি। দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পরাজিত করে তাদেরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করি।

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, পরিষ্কার কথা এখনো সময় আছে পদত্যাগ করুন। সংসদ বিলুপ্ত করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং তাদের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।

সরকারদলীয় নানা অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে রক্ত ঝরিয়ে, ভয় দেখিয়ে, খুন করে, বাড়িঘর পুড়ে দিয়ে আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে চায়। মুন্সীগঞ্জের শুধুমাত্র শাওনকে হত্যা করে ক্ষ্যান্ত হননি। এরপরে তারা বিএনপি নেতার কারখানা জ্বালিয়ে দিয়েছে। বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছি। এরপরে মুন্সীগঞ্জে একটি ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছে। এভাবে সারা দেশে একটি ত্রাসের সৃষ্টি করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।

তিনি বলেন, আমাদের ছয় শতাধিক মানুষকে গুম করেছে। সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ৩৫ লাখ নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। তারা জাতিসংঘে গিয়ে বলে যুদ্ধ চাই না, নিষেধাজ্ঞা চাই না। শাওনের মৃত্যুতে আব্দুর রহিম এবং নুর আলমের মৃত্যুতে মানুষের যে দাবি শুরু হয়েছে, যে আন্দোলন শুরু হয়েছে যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে, এই অভ্যুত্থানকে কখনো বন্ধ করা সম্ভব হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে শাওনের বাবার কণ্ঠে আমরা আহাজারি শুনিনি, তার চোখে অশ্রু দেখিনি। তার চোখে একই সঙ্গে আগুন দেখেছি। বজ্র কণ্ঠে সে বলছে আমি আপস করব না। শাওনের বাবাকে ভয় দেখানো হচ্ছে। যে তুমি বলো পেছন থেকে ইটের আঘাতে সে (শাওন) মারা গেছে। তুমি বলো তাকে বিএনপির লোকেরাই মেরেছে। শাওনের যে ডেথ সার্টিফিকেট তাতে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে যে, মেসিভ ব্রেইন ইজুরি ডিউ টু গান শট। বন্দুকের গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে। তাই আর মিথ্যাচার করবেন না। মিথ্যাচার করে জনগণকে বোকা বানিয়ে রেখেছেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে নিহত যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শাওনের বাবা তোয়াব বলেন, আমার ছেলে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে নিহত হয়েছে। যারা আমার সন্তানকে হত্যা করেছে তারা জনগণের অধিকারকে হত্যা করেছে। আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে, আপনারাই আমার ভরসা। আপনারা আমার পাশে থাকলে কোনো শক্তিকেই আমি ভয় পাই না।

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।